মুখ দেখে নয়, কাজ দেখে নেতা বানান- ওবায়দুল কাদের

অনলাইন ডেস্ক।।

দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে জোর দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে কমিটি করতে হবে। কমিটিতে ত্যাগী, দুঃসময়ের কর্মী, সুখে দুঃখে যারা থাকে তাদের প্রাধান্য দিতে হবে। আত্মীয়-স্বজন ও মুখ দেখে নেতা বানাবেন না। কর্ম (কাজ) দেখে নেতা বানাবেন।

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রতিনিধি সভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে একটি গোষ্ঠী। এরা তারাই যারা সাম্প্রদায়িকতার পৃষ্ঠপোষক, নষ্ট রাজনীতির ধারক ও বাহক। এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এদের মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার বন্ধে টিম গঠন করতে হবে। লোক নিয়োগ করতে হবে।

বাংলাদেশে কোনো অপশক্তিকে আগুন নিয়ে খেলতে দেওয়া হবে না জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, তাদের সাম্প্রদায়িক, জঙ্গিবাদী ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, সারা বছর, প্রতিদিনই কর্মসূচি থাকবে আওয়ামী লীগের। জেলা, উপজেলা, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন পর্যায়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। দলীয় নেতাকর্মীদের ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজপথ ছাড়বেন না, শহর ছাড়বেন না। সতর্ক থাকবেন প্রতিদিন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে নেই। নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথে, মাঠে আছি, থাকবো। আমাদের প্রতিদিন কর্মসূচি আছে

বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের চর্চা একমাত্র আওয়ামী লীগ করে মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগে নিয়ম অনুযায়ী সব হয়। এর মধ্যে তিনটি জাতীয় সম্মেলন হয়েছে সময়ের আগেই। ফখরুল সাহেব, কবে সেক্রেটারি হয়েছেন মনে আছে? বিএনপির কোনো সম্মেলন হয় না।

বিএনপি কোন মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের ঘরেই তো গণতন্ত্রের চর্চা করে না। তারা দেশে গণতন্ত্র কীভাবে আনবেন? তারা বিদেশিদের কাছে নালিশ করেন বাংলাদেশে নাকি গণতন্ত্র নেই। তারা নিজেরাই গণতন্ত্রের চর্চা করেন না। ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি গণতন্ত্রকে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে গেছে।

শেখ হাসিনা ঘরে ও দেশে গণতন্ত্রের চর্চা করেন উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। এখানে শেখ হাসিনা কাউকে নির্বাচন কমিশনের সদস্য করেননি।

প্রতিনিধি সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ও শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক প্রমুখ। এছাড়াও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও ময়মনসিংহ বিভাগের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিনিধি সভায় যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়

১. সব উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির তথ্য আগামী ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বায়োডাটাসহ কেন্দ্রীয় বিভাগীয় সাংগঠনিক টিমের কাছে জমা দিতে হবে। জেলা ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক টিম যাচাই-বাছাই করে কমিটি অনুমোদন দেবে।

২. সব জেলা-মহানগর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে সাবেক ছাত্রনেতা, কারানির্যাতিত, দলের দুঃসময়ের নেতাকর্মীদের সমন্বয় করে সবার বায়োডাটা কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক টিমের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে কেন্দ্রীয় দপ্তর সেলে জমা দিতে হবে।

৩. জেলা বর্ধিত সভার সম্ভাব্য তারিখ ১ থেকে ৫ মার্চ নির্ধারণ।

৪. যেসব উপজেলায় কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক টিমকে অবগত না করে জেলা আগের তারিখে অবৈধভাবে কমিটি সম্পন্ন করেছে, সেসব কমিটি বাতিল বলে গণ্য হবে।

৫. বিভিন্ন উপজেলায় বয়সের কারণে দলের দুঃসময়ের নিবেদিত যেসব কর্মী মারা গেছেন তাদের জন্য শোক প্রস্তাব।

৬. পুনরায় দায়িত্ব পাওয়ায় এবং মতিয়া চোধুরীকে সংসদ উপনেতা নির্বাচিত করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা।

৭. জেলায় বর্ধিত সভা সম্পন্ন হওয়ার পর মার্চ মাসে বিভাগীয় সমাবেশের তারিখ নির্ধারণ এবং

৮. বাকি যেসব উপজেলায় সম্মেলন সম্পন্ন হয়নি সেগুলো রমজান মাসের আগে সম্পন্ন করতে হবে।

ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় কেন্দ্রের নির্দেশনার বিষয়ে নেত্রকোন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আমিরুল ইসলাম বলেন, এরইমধ্যে সম্মেলন সম্পন্ন হওয়া উপজেলাগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি আগামী ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কেন্দ্রে জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি জেলা কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ করে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জমা দিতে হবে।

তিনি বলেন, যেসব উপজেলার সম্মেলন এখনো বাকি সেগুলোর সম্মেলন আসন্ন রমজান মাসের অিাগেই সম্পন্ন করার কথা বলা হয়েছে। আমার জেলা মোহনগঞ্জ, পূর্বধলা ও আটপাড়া উপজেলার সম্মেলন এখনো বাকি। আশা করি এসব সম্মেলন কেন্দ্র নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে পারবো।

আমিরুল ইসলাম বলেন, আগামী নির্বাচনে তৃণমূলে দলকে সুসংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ রাখতেও বলা হয়েছে কেন্দ্র থেকে। কোনো ধরনের গ্রুপিং রাজনীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না বলে জানানো হয়।

সুত্রঃ
জাগো নিউজ

     আরো পড়ুন....

পুরাতন খবরঃ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
error: ধন্যবাদ!